ভ্রমণ সবসময় আমার কাছে আনন্দের, আর সমুদ্রের প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক পুরোনো। তাই গত গ্রীষ্মে কক্সবাজার ভ্রমণের পরিকল্পনা করতেই আমার মন যেনো আনন্দে নেচে উঠলো। কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হওয়ার কারণে এটি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাই এই ভ্রমণের পরিকল্পনায় ছিল উত্তেজনা ও আকাঙ্ক্ষার মিশেল।
যাত্রা শুরু
আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সকালে রওনা হলাম এবং সড়ক পথে যাত্রা করেছিলাম। পথিমধ্যে চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য আমাদের মনে একধরনের নতুন অনুভূতি এনে দিলো। যাত্রার পথে আমরা বিভিন্ন স্থানে থামলাম, স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিলাম এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করলাম।
কক্সবাজার সৈকতে প্রথম দিন
কক্সবাজার পৌঁছে প্রথমেই আমরা হোটেলে উঠলাম এবং কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে সৈকতের দিকে রওনা দিলাম। সৈকতে পৌঁছে বিশাল ঢেউ আর সূর্যের ঝিলমিল আলো আমাদেরকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলল। সমুদ্রের নীল জলরাশি এবং সাদা বালির বিস্তীর্ণ প্রান্তর যেনো মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুললো। আমরা সেখানে পা ডুবিয়ে হাঁটলাম, ঢেউয়ের আঘাতে স্নিগ্ধ হলাম, এবং প্রকৃতির সাথে মিশে গেলাম। সমুদ্রের স্রোত এবং বাতাসের শব্দ যেন এক আশ্চর্য সঙ্গীতের মতো লাগছিল।
স্থানীয় খাবার ও স্থানীয় বাজার
সন্ধ্যায় আমরা স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখলাম এবং কক্সবাজারের বিখ্যাত খাবারগুলো খেয়ে দেখলাম, বিশেষ করে শুটকি মাছের স্বাদ ছিল অসাধারণ। এছাড়া সমুদ্রের তাজা মাছ ভাজার স্বাদও ছিল অবিস্মরণীয়। স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন ধরনের শাঁখা-বালার দোকান ছিল এবং আমরা সেখান থেকে কিছু স্মারক কিনলাম।
হিমছড়ি ও ইনানী সমুদ্র সৈকত
পরের দিন আমরা হিমছড়ি এবং ইনানী সৈকতে ঘুরতে গেলাম। হিমছড়ি থেকে সমুদ্রের সৌন্দর্য দেখার জন্য একটি পাহাড়ে উঠলাম। সেখান থেকে সমুদ্রের দৃশ্যটি মনোমুগ্ধকর ছিল এবং সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতাও ছিল অনবদ্য। ইনানী সৈকতে পৌঁছে আমরা ছোট ছোট পাথরের উপর দিয়ে হেঁটে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে গেলাম। এখানে পানির স্বচ্ছতা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করেছিল।
আরও পড়ুন: আমি শিক্ষক হতে চাই রচনা
স্মরণীয় অভিজ্ঞতা ও ফিরে আসা
কক্সবাজারের শেষ দিনটিতে আমরা আবারও সৈকতে সময় কাটালাম এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে খেলতে লাগলাম। এক একবার ঢেউ আসতো আর আমরা হাসতে হাসতে সরে যেতাম। এই হাসি, আনন্দ, আর প্রকৃতির সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো ছিল স্মৃতিতে ভরে রাখার মতো। বিকেলে আমরা কক্সবাজার থেকে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিলাম এবং মনটা যেন একটু খারাপই হয়ে গেল।
উপসংহার
কক্সবাজারের এই ভ্রমণ আমার জীবনে একটি চিরস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। সমুদ্রের ঢেউ, প্রকৃতির নৈসর্গিক দৃশ্য এবং স্থানীয় আতিথেয়তা সবকিছুই আমাকে মুগ্ধ করেছে। এই ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তই আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে, যা আমাকে সবসময় আনন্দে ভরিয়ে রাখবে।