হ্যালোজেন মৌল কাকে বলে

হ্যালোজেন মৌল হলো পর্যায় সারণির ১৭তম গ্রুপের (Group 17) মৌলগুলো, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল এবং গ্যাস, তরল ও কঠিন অবস্থায় পাওয়া যায়। হ্যালোজেন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ “halos” (লবণ) এবং “genes” (উৎপাদনকারী) থেকে, অর্থাৎ “লবণ উৎপাদনকারী।”

হ্যালোজেন মৌলের সংজ্ঞা:

হ্যালোজেন মৌল হলো পর্যায় সারণির ১৭তম গ্রুপের মৌল, যা অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল অধাতু এবং সাধারণত ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ উৎপন্ন করে।


হ্যালোজেন মৌলের তালিকা:

পর্যায় সারণির ১৭তম গ্রুপের মৌলগুলো হলো:

  1. ফ্লুরিন (Fluorine, F)
  2. ক্লোরিন (Chlorine, Cl)
  3. ব্রোমিন (Bromine, Br)
  4. আয়োডিন (Iodine, I)
  5. অ্যাস্টাটিন (Astatine, At)
  6. টেনেসিন (Tennessine, Ts) (সাম্প্রতিক আবিষ্কারকৃত মৌল, কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়)

হ্যালোজেন মৌলের বৈশিষ্ট্য:

  1. অধাতু প্রকৃতি: এগুলো অধিকাংশ অধাতু।
  2. উচ্চ প্রতিক্রিয়াশীলতা: ফ্লুরিন সর্বাধিক প্রতিক্রিয়াশীল, এরপর ক্লোরিন।
  3. বর্ণ:
    • ফ্লুরিন: হালকা হলুদ গ্যাস।
    • ক্লোরিন: সবুজাভ হলুদ গ্যাস।
    • ব্রোমিন: লালচে-বাদামি তরল।
    • আয়োডিন: বেগুনি-কালচে কঠিন।
  4. বিষাক্ত প্রকৃতি: বেশিরভাগ হ্যালোজেন মৌল বিষাক্ত।
  5. ইলেকট্রনগ্রহণ প্রবণতা: হ্যালোজেনের ইলেকট্রনগ্রহণ প্রবণতা বেশি, তাই এরা সাধারণত একা চার্জযুক্ত ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয়।

ব্যবহার:

  1. ফ্লুরিন: দাঁতের পেস্টে (ফ্লুরাইড), ফ্রিজে কুল্যান্ট হিসাবে।
  2. ক্লোরিন: পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে, ব্লিচিং এজেন্ট।
  3. ব্রোমিন: ফটোগ্রাফি এবং অগ্নি প্রতিরোধক উপাদানে।
  4. আয়োডিন: জীবাণুনাশক এবং থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে।
  5. অ্যাস্টাটিন: চিকিৎসা ক্ষেত্রে রেডিওঅ্যাকটিভ থেরাপিতে।

উদাহরণ:

  • হ্যালোজেন ধাতুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ তৈরি করে, যেমন: Na+Cl→NaCl (সাধারণ লবণ)Na + Cl \rightarrow NaCl \, (\text{সাধারণ লবণ})

উপসংহার: হ্যালোজেন মৌলগুলো তাদের উচ্চ প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং বিভিন্ন ব্যবহারিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

ত্রিমাত্রিক কাকে বলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *