গ্রাফটিং-এর সংজ্ঞা:
গ্রাফটিং হলো এমন একটি উদ্ভিদ প্রজনন পদ্ধতি যেখানে একটি উদ্ভিদের কাণ্ড বা ডালপালাকে (যা ফল বা ফুল উৎপাদন করবে) আরেকটি উদ্ভিদের শিকড় বা স্টকে যুক্ত করা হয়, যাতে উভয় অংশ একত্রে বৃদ্ধি পায়।
গ্রাফটিং-এর উদ্দেশ্য:
- উন্নত ফলন: গ্রাফটিং-এর মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল জাত তৈরি করা যায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: একটি রোগ-প্রতিরোধী উদ্ভিদের শিকড় ব্যবহার করা হলে নতুন উদ্ভিদে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- তাড়াতাড়ি ফলন পাওয়া: বীজ থেকে জন্মানো উদ্ভিদের তুলনায় গ্রাফটিং করা উদ্ভিদ দ্রুত ফলন দিতে পারে।
- উন্নত বৈশিষ্ট্য সংযোজন: একাধিক গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ তৈরি করা যায়।
গ্রাফটিং-এর ধাপসমূহ:
- স্টক এবং স্কিয়ন নির্বাচন:
- স্টক (Rootstock): এটি হলো শিকড়যুক্ত অংশ যা মাটি থেকে পুষ্টি সরবরাহ করে।
- স্কিয়ন (Scion): এটি হলো কাঙ্ক্ষিত ফল বা ফুল উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত শাখা।
- কাটিং করা:
- স্টক এবং স্কিয়নের উপযুক্ত অংশ সমান আকারে কাটা হয়।
- জোড়া লাগানো:
- কাটা অংশগুলো পরস্পরের সাথে সঠিকভাবে যুক্ত করা হয়।
- বন্ধন করা:
- যুক্ত করার পরে অংশগুলো সুরক্ষিত করতে রাবার ব্যান্ড বা পলিথিন দিয়ে মোড়ানো হয়।
- বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ:
- কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্কিয়ন এবং স্টক একত্রে বৃদ্ধি পায়।
গ্রাফটিং-এর প্রকারভেদ:
- টপ গ্রাফটিং (Top Grafting)
- বাড গ্রাফটিং (Bud Grafting)
- সাইড গ্রাফটিং (Side Grafting)
- অ্যাপ্রোচ গ্রাফটিং (Approach Grafting)
- ক্লিফট গ্রাফটিং (Cleft Grafting)
উদাহরণ:
- আমগাছের গ্রাফটিং।
- লেবু গাছের গ্রাফটিং।
- গোলাপ ফুলের গ্রাফটিং।
গ্রাফটিং-এর সুবিধা:
- বিভিন্ন জাতের বৈশিষ্ট্য সংমিশ্রণ করা যায়।
- ফল ও ফুল দ্রুত উৎপাদন করা সম্ভব।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়।
গ্রাফটিং-এর সীমাবদ্ধতা:
- সঠিকভাবে না হলে উদ্ভিদ নষ্ট হতে পারে।
- কিছু উদ্ভিদে গ্রাফটিং কাজ করে না।
- এটি সময়সাপেক্ষ এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
গ্রাফটিং উদ্ভিদবিজ্ঞানের অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি যা কৃষি ও বাগানচর্চায় বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়।
আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি কাকে বলে