স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টিতে অণুজীবের ভূমিকা

By Sohoj Uttar

Updated on:

অণুজীবের কিছু প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এগুলো মানবদেহে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায় এবং বিভিন্ন রোগের কারণ হয়। ক্ষতিকর অণুজীবগুলি মূলত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ও প্রোটোজোয়া থেকে আসে এবং বিভিন্ন উপায়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে, যেমন দূষিত খাবার, পানি, বাতাস, বা সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে।

স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হিসেবে অণুজীবের ভূমিকা:

১. সংক্রামক রোগ সৃষ্টি

অণুজীব দ্বারা সংক্রমিত হয়ে নানা ধরনের সংক্রামক রোগ হতে পারে, যেমন:

  • ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ:
    • যক্ষ্মা (টিবি) – Mycobacterium tuberculosis
    • কলেরা – Vibrio cholerae
    • টাইফয়েড – Salmonella typhi
  • ভাইরাসজনিত রোগ:
    • ইনফ্লুয়েঞ্জা (ফ্লু) – ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
    • হেপাটাইটিস – হেপাটাইটিস ভাইরাস
    • কোভিড-১৯ – SARS-CoV-2
  • প্রোটোজোয়াজনিত রোগ:
    • ম্যালেরিয়া – Plasmodium পরজীবী
    • আমিবিক ডিসেন্ট্রি – Entamoeba histolytica
  • ফাঙ্গাল সংক্রমণ:
    • দাদ (Ringworm) – Trichophyton
    • ক্যান্ডিডিয়াসিস – Candida albicans

২. খাদ্য ও পানিবাহিত সংক্রমণ

অণুজীব খাদ্য ও পানিতে দূষণ সৃষ্টি করে, যা খেলে ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, পেটের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:

  • Escherichia coli ব্যাকটেরিয়া দূষিত খাদ্যের মাধ্যমে অন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
  • Salmonella সংক্রমিত খাদ্য থেকে টাইফয়েড হতে পারে।

৩. ওষুধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি (Antibiotic Resistance)

অতিরিক্ত বা ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে কিছু ব্যাকটেরিয়া নিজেদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। যেমন:

  • Methicillin-resistant Staphylococcus aureus (MRSA)
  • Multi-drug resistant Tuberculosis (MDR-TB)

৪. হাসপাতাল সম্পর্কিত সংক্রমণ (Nosocomial Infections)

হাসপাতালে থাকা রোগীরা বিভিন্ন অণুজীবজনিত সংক্রমণের শিকার হতে পারে, যেমন:

  • সেপসিস (রক্ত সংক্রমণ)
  • নিউমোনিয়া
  • ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI)

৫. এলার্জি ও বিষক্রিয়া সৃষ্টি

কিছু ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া পরিবেশে বিষাক্ত টক্সিন নির্গত করে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা, ত্বকের অ্যালার্জি বা বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। উদাহরণ:

  • অ্যাসপারজিলাস ফাঙ্গাস থেকে অ্যাসপারজিলোসিস রোগ হয়।
  • বিষাক্ত ফুড টক্সিনের কারণে বোটুলিজম (ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিনাম) হতে পারে।

অণুজীবজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধের উপায়:

  1. নিয়মিত হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
  2. বিশুদ্ধ পানি পান করা এবং নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা।
  3. টিকা গ্রহণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা।
  4. ওষুধ সঠিকভাবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা।
  5. বাসা ও কর্মস্থলের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখা।

সঠিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অণুজীবজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

অণুজীব জগৎ কাকে বলে

Sohoj Uttar

Leave a Comment

সহজ উত্তর